মিষ্টি আলু চাষে কৃষকের অনীহা
কৃষি প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
মিষ্টি আলুর সাথে আমরা কম বেশি সকলেই পরিচিত। বাচ্চাদের কাছে এই আলু মানে ভিন্ন এক স্বাদের আমেজ। শুধু বাচ্চা কেন ছেলে বুড়ো সকলেরই রয়েছে এই আলুর প্রতি বিশেষ ধরনের দূর্বলতা। মিষ্টি অালুর স্বাদ ও গন্ধ অতুলনীয়ই বলা চলে। পুষ্টিমানের দিক থেকেও মিষ্টি আলু কম নয়। সেই আলু আজ বিভিন্ন কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে। দিনকে দিন কমে যাচ্ছে এর চাষাবাদ।
বাংলাদেশের বেশ কিছু জেলাতে মিষ্টি আলুর চাষাবাদ হলেও বরিশাল জেলায় সবচেয়ে বেশী চাষ হয় এ আলু। গত কয়েক বছর এই জেলার মুলাদী থানার চর গাছুয়া এবং ডুমুরিতলা গ্রাম ছাড়াও বেশ কিছু এলাকায় মিষ্টি আলু চাষ হয়েছে ব্যাপক ভাবে। স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর তা ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানিও করা হয়েছে।
২০১০ সাল পর্যন্ত স্থানীয় শতকরা ৫০ভাগ কৃষক এই আলুর চাষ করত। আলু চাষীরা দুই ধরনের আলুর চাষ করত-দেশী জাতের আলু এবং ইণ্ডিয়ান জাতের আলু। স্বাদের দিক দিয়ে দেশী জাতের আলু সকলেরই পছন্দ। এ আলুর মিষ্টতা ও ঘ্রাণ বিদেশী জাতের আলুু থেকে বেশী।
কার্তিক থেকে অগ্রহায়ণ মাসে চাষ করা এ ফসল তোলা হতো জৈাষ্ঠ মাস থেকে আষাঢ় মাসের মধ্যে। স্থানীয় ভাষায় প্রতি কড়ায় (শতাংশ) দেড় মণের মত আলু উৎপাদিত হতো। আলু উত্তোলনের সময়ে মৌসুম এলে প্রায় প্রতি ঘরেই আলু উঠানোর ধুম পড়ে যেত।
গত কয়েক বছর ধরে আলুর উঠানোর মৌসুমে এসে প্রতি পাঁচ কেজি আলুর দাম হয় ১০-১৫টাকা। তাও আবার চাহিদা অনেক কম। মধ্যসত্বভোগী, দালাল, ফরিয়াদের কারনে ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক। মৌসুমের শেষ সময়ে এসে আলু উঠালে সেই আলু বেশি দিন মজুদ করেও রাখা যায় না। সব মিলিয়ে হিসাব করলে কৃষকদের আলুর মৌসুম শেষে সবচেয়ে বেশী ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
সর্বোপরি আলু চাষের আয় থেকে ব্যয় বেশি । আর সেজন্যই ধীরে ধীরে আলু চাষ করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কৃষক। স্থানীয় চাহিদা কম, বাড়তি ব্যয়, উৎপাদন খরচ বেশি থাকার কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় মিষ্টি আলু।
প্রতিক্ষণ/এডি/মাসুদ